Posts

Showing posts from May, 2017

সবজিওয়ালা - ২

এরপর একদিন অনেক রাত হয়েছিলো, তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতেই ইচ্ছে করছিলো। তবুও দাদু একা বসে আছে দেখে থেমে গেলাম। আমাকে দেখে দাদু হাসলেন। তার মধ্যেই এক মহিলা এসে পটলের দরদাম করতে লাগলেন, ফলে আমাকে আর আলাদা করে দাম জিজ্ঞেস করতে হলো না। দাদু কখনো এক কেজির দাম বলেন না, সবসময় দেখি পাঁচশোর দাম বলেন। পাঁচশো পনেরো টাকা। মহিলা জানতে চাইলেন, “ছশো হবে? পনেরো টাকায়?” দাদু জোর গলায় বললেন, “না।” তিনি কিছুক্ষণ ইতস্তত করে বললেন, “আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে আড়াইশো দিন।” আমি শুরু করলাম, “দাদু কলকাতায় এসে কি হলো তারপর?” সবজিওলারা হয়তো আশাই করে না কেউ এক কেজি কিনবে, তাই পাঁচশো দিয়েই দাম বলে। কেউ কেউ আড়াইশো দিয়েই দাম বলা শুরু করে। “তারপর এদিক সেদিক এদিক সেদিক করে করে করে…” “এদিক সেদিকটা কি?” “এই তো চায়ের দোকান, হোটেল, তারপর একটা ছাপাখানা…” “কিসের ছাপাখানা?” “কাপড়ের রঙ করার। তারপর আবার এমব্রয়ডারির কাজ শিখলাম। বিয়ে হলো সংসার বাড়লো…” ওই মহিলা বলে উঠলেন, “কত হয়েছে আমারটা?” “আট টাকা। আট টাকা দিন।” “পঞ্চাশ টাকা খুচরো হবে?” “না, খুচরো দিন। আজ একটুও খুচরো হবে না।” “তিনি দশ টাকা দিয়ে দুটাকা ফের

বাঙালি

আগ্রা, অনেক বছর আগে “তুম কেয়া বাংলা পড়নে জানতে হো?”   “বলনে ভি জানতা হুঁ।”   “আচ্ছা! কাঁহা শিখা?”   “কলকাত্তা। আপনি হিন্দি চালিয়ে যেতে পারেন, বেশ লাগছে।”   “দূর মশাই! আমি গড়পারের লোক, হিন্দি কি কেউ সাধে বলে নাকি?” কলকাতায় সবাই বাংলা বলি। কেউ কারো সঙ্গে গায়ে পড়ে কথা বলি না। কিন্তু বাংলার বাইরে গেলে বাংলা ভাষার কদর অনেকটা বেড়ে যায়। এক বাঙালি অন্য বাঙালিকে দেখে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে। ১। রোম, ২০০৫ “আপনারে কেমন সেনা সেনা লাগসে।” হকচকিয়ে মুখের দিকে তাকিয়ে বললাম, “না, আমি তো আপনাকে চিনি না।” “না, আমার কেমন সেনা সেনা লাগসে। আমি আপনারে কোথায় য্যানো দেখসি।” “না, কোথাও দেখেননি। আপনার কোথাও একটা ভুল হচ্ছে।” “না, আপনারে দেখসি।” খুব সিরিয়াস হয়ে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলাম -- “শুনুন আসলে আপনার গায়ের রঙ, আমার গায়ের রঙের সঙ্গে কোনো তফাৎ নেই তো, তাই আপনার মনে হচ্ছে আপনি আমাকে কোথাও দেখেছেন। বিদেশ বিভূঁইতে একটু একইরকম দেখতে লোক মনে হলে আপনার এমন চেনা চেনা লাগতে পারে, কিন্তু আমি আপনার চেনা নই।” সুদূর রোমে। আমি একা একটা জায়গায় লাগেজটা নিয়ে দাঁড়িয়ে। বর গেছিলো ইন্ডিয়ান রেস্ট

বাংলায় বাংলা

সন্তোষপুর মোড় থেকে আমার কলেজ প্রায় এক কিলোমিটার। সেটুকু রাস্তা অটো বা রিক্সায় যেতে হয়। একদিন হঠাৎ অটোতে উঠে হকচকিয়ে গিয়েছিলাম। “Where will you get down madam?” আমি বাংলায় বললাম, “কলেজে নামবো।” “OK, I thought so.” আমি হেসেছিলাম। নামার সময় যখন ভাড়া দিতে গিয়েছিলাম, তখন অটোওয়ালা জিজ্ঞেস করেছিলো, “Don’t you have change?” আমি বলেছিলাম, “না।” অটোওয়ালা বলেছিলো, “It’s OK, nobody seems to have change. I’ll give you change. ” অবাক হবার কিছু নেই। আমার অন্য কলিগরাও ওর অটোতে উঠেছে। আমাদের দেখলেই সে ইংরাজী বলে। আরো একদিনের ঘটনা। একদিন কলেজ যাওয়ার সময় সন্তোষপুর মোড়ে গিয়েই শুনলাম অটোস্ট্রাইক, একটা অটোও যাবে না। কোনো রিক্সাও যেতে চাইলো না, বা সুযোগ বুঝে ভাড়া তিনগুণ চাইতে লাগলো। কয়েক মিনিট পরে শুনতে পেলাম, “ম্যাডাম যাবেন? দশ টাকা দিতে হবে কিন্তু।” পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি এক রিক্সাওলা আমাকে কথাটা বলছে। অলরেডি তার রিক্সায় এক মহিলা বাচ্চা নিয়ে বসে আছে। শেয়ারে যেতে হবে তিনি দশ আমি দশ। পনেরো টাকা ভাড়া হয় দুজনে, রিক্সাওলার কুড়ি হলো, সেও খুশি আমিও খুশি। তবে সেই মহিল