Posts

Showing posts from September, 2017

মহালয়া

মহালয়ার দিন ভোরবেলা উঠতাম। আগেরদিন থেকেই মনে মনে একটা উত্তেজনা কাজ করতো। এই তো কাল মহালয়া, তারপরেই স্কুলে পুজোর ছুটি পড়ে যাবে। একমাস ছুটি কি আনন্দ। পরীক্ষার আগে ভোরবেলা উঠে লেপ মুড়ি দিয়ে পড়তে বসেছি দু-একবার। আলাদা করে ভোরের আকাশ কখনো দেখা হতো না, মহালয়ার দিন ছাড়া। আবির ছড়ানো ভোরের আকাশ। হালকা শীত শীত ভাব। টিনের চালে শিশির পড়ার টুপটাপ আওয়াজ। শব্দ বলতে বীরেন্দ্র কৃষ্ণের গলা। একদম ছোটবেলায় বাবা রেডিও চালিয়ে দিয়ে তুলে দিতো। গান আর কথাগুলোর মানে কিছু না বুঝলেও শোনাটা যেন একটা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। শুধু তাই নয় মহালয়াটা এতোটাই পরিচিত যে ঘুম ভাঙার পর বলে দিতে পারতাম সবে শুরু, নাকি আরও অনেক বাকি। ভোরের হালকা আলোয় শুনতে ভালোও লাগতো। পরদিন সকালে চায়ের আসরে - কে কখন উঠেছে, কে পুরোটা শুনেছে, কেউ আদৌ শুনেছে কিনা তাই নিয়ে চলতো বিস্তর আলোচনা। একটু বড় হতে রেডিওরটা শোনা শেষ হলে, চলে যেতাম মেজোমার বাড়ি। টিভিতে মহালয়া দেখার জন্যে। গ্রামে তখন দুটো টিভি। একটা ক্লাবে, আর একটা মেজোমাদের। দুটোই সাদা-কালো। ক্লাব একটু দূরে। তাই মেজোমার বাড়ি। ক্লাবের সদস্যদের মধ্যে একটা ঝামেলা হওয়ায় তাদের টিভিটা বন্ধও ছিলো বহুদ

শিক্ষক দিবস

আড়ম্বর করে ফেসবুকের দেওয়ালে কোনো “দিবস” জানানোটা পছন্দ করি না। হাস্যকর লাগে। মনে হয় এ আবার হওয়ার কি আছে - আলাদা করে প্রেম দিবস, মা-বাবা দিবস, বোকা বোকা গোলাপ দিবস, বন্ধু দিবস। কৃত্রিম লাগে। প্রতিটা দিনই সব দিবস হতে পারে। তবে এটা ঠিক যে, কিছু লিখে ফেসবুকের দেওয়ালে শেয়ার করতে চাইলে অনেক ঘটনাই লেখা হয়ে যায়। না হলে অলস মস্তিষ্ক একেবারেই কাজ করতে চায় না। কাল থেকে একটা ঘটনা বারবার মনে পড়ছে। আমি তখন খুবই ছোট। শিক্ষক হওয়ার মতো বয়েস হয়নি। যোগ্যতা নিয়ে এখনো সংশয় আছে। সাল তারিখ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। চাইলেই বের করা যায়। সেদিন আমার বড় জেঠুর এক নাতনির অন্নপ্রাশন ছিলো। ওই দিন দুপুরে আমাদের পাশের বাড়ির পিসেমশাই তালগাছ থেকে পড়ে গেছিলো। সব আনন্দ মাটি হয়ে সবাই ওইদিকেই দৌড়। পিসেমশাই তালগাছে উঠে হাঁড়ি বেঁধে রাখতো। গরমের দুপুরে তালের রস খাওয়ার জন্য। কাজটা তার কাছে খুব সহজ ছিলো, অভ্যেস বলেই। তবু অভ্যেসকে ছাড়িয়ে বিপদটাও ঘটে গেছিলো। বহু চিকিৎসার পর পিসেমশাই লাঠি ধরে টলে টলে হাঁটতে পেরেছিলো। হাঁটতে পারার পর তার অদম্য ইচ্ছা আর মনের জোর স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আশার আলো দেখিয়েছিলো। দিন আনা দিন খাওয়া জীবনে আ