Posts

Showing posts from January, 2017

সংক্রান্তির কাহিনী

গরুর গাড়ির ক্যাঁচক্যাঁচ, গরু মোষের ঢিমে তালে চলন, মুনিষের হনহন দৌড়েই চাষীর খামার ভরে ওঠে ধানে। ঠিক অঘ্রাণের মাঝ থেকে শুরু হয়ে যায় ধান কাটা। ভোরবেলা টিনের চালে হিমের টুপটাপ আওয়াজ। কিছুদিন পর শিশিরের টুপটাপকে ছাপিয়ে যেতো ধান ঝাড়ার আওয়াজ আর লেবারদের গুঞ্জন। ধান কাটার পরে সেগুলো আঁটি বেঁধে মাঠেই কিছুদিন সাজিয়ে উঁচু করে রেখে দেওয়া হয়। শেষ দিক থেকে পৌষের শুরুতে সবাই মোটামুটি মাঠ থেকে ধান তোলা শেষ করে ফেলে। প্রথমে খামারে এনে জমা করে, তারপর সেগুলো নিয়ে গাদা দেওয়া হয়। গাদা সবাই দিতে পারে না। দেওয়ার একটা কায়দা আছে। তাই ধান কাটা বা তোলার জন্যে অনেক লোক নিয়োগ হলেও গাদা দেওয়ার জন্যে নির্দিষ্ট একজন থাকেই সব বাড়ির। আমাদের ছিলো সোনাকাকা। এইসময় বাড়ির চারপাশ, উঠোন, খামার সবই খুব ঝকঝকে পরিষ্কার থাকে। বৃষ্টির গল্প থাকে না। আর পরিষ্কার জায়গাতেই ধান তুলতে হয়। গোবর জলের গোলা দিয়ে সব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখা হয়। এই গোলা দেওয়ারও একটা পদ্ধতি আছে। সবাই পারেনা। ঝাঁটা দিয়ে সুন্দর গোল করে জলটা টেনে নিতে হয়। পুকুরপাড়ের রোদ পেত অলস পিঠ। কেউবা খেত ভাত। কেউ বা লেপমুড়ি দিয়ে দিতো টানা একটা ভাত ঘুম। একদম সকালে কে

একই অঙ্গে এতো রূপ

Image
“একই  অংগে এত রূপ  দেখিনিতো  আগে; নাম  সার্থক।” আমার একটা লেখায় সাবিনাদি কমেন্ট করেছে। সেই প্রসঙ্গে আমার মাথায় এলো - এক অঙ্গে আমি এতো রূপ নিয়ে জন্মাইনি, বরং বলা ভালো “এতো জনের” রূপ নিয়ে জন্মেছি। আমার গ্রামের তরণীদাদু আমাকে দেখতে পেলেই জয়ললিতা বলে ডেকে একগাল হেসে দিতেন। মাকে আর আমাকে একসঙ্গে দেখলে মাকে বলতেন - “দ্যাখো ছোটবউমা তোমার এই মেয়েটাকে দেখলেই আমার জয়ললিতার মুখ মনে পড়ে যায়।” মা হেসে দিতো। অতো ছোটবেলায় জয়ললিতাকে নিয়ে আমার মাথাব্যথা ছিলো না। বড় হয়ে যখন ভাবতাম দাদু কোন অ্যাঙ্গেল থেকে বলতেন! উত্তর পাইনি। আজ তিনিও নেই, জয়ললিতাও। বিয়ের পরে পরেই ওড়না মাথায় দেওয়া একটা ছবি দেখে দাড়িকাকু বলেছিলো - তোকে এই ছবিটায় বাংলা দেশের প্রধানমন্ত্রী সেখ হাসিনার মতো দেখাচ্ছে। আমার বর শুধরে দিয়ে বলেছিলো না না খালেদা জিয়ার মতো। 😀 এক দিদি বলতো - “রূপু তোমাকে ঠিক আমার ননদের মতো দেখতে, সে মোটা আর তুমি রোগা, এই যা তফাৎ।” কদিন আগেই অরুণাভদা বললেন - “আরে আমি রাস্তায় রোজই তো কত কত রূপশ্রী দেখি। আর তুমি একজন “অনুভব” দেখেছো তাতে আশ্চর্যের কী আছে?!” আমি ভাবলাম উনিও যে অনেক রূপশ্রী দেখেন তাতে

স্মার্ট ফোনের কিছু কথা

Image
বড় স্ক্রিন আর স্মার্ট ফোনের দৌলতে কে কাকে ফোন করে, কার কোন নামে ফোন আসে, তারা কেমন দেখতে,  একটু খেয়াল করলেই দেখা যায়। আমি বাসে। যাদবপুর থানার সিগনাল। একজন বাইক চালক হেলমেট খুলে পকেট থেকে তড়িঘড়ি  ফোন বের করলেন। দেখলাম হোয়াটস অ্যাপে কল, বড় বড় অক্ষরে লেখা - Raj.  আবার দেখলাম আমার পাশে বসা মেয়েটা  Arindam এর  সঙ্গে চ্যাট করছে। আজ মহিলা কামরায় এক দিদিমণি MA Airtel কে ফোন করলেন। খুব ফিসফিস করেই কথা বলছিলেন। কিচ্ছু শুনতে পাচ্ছিলাম না। তার পরেই হঠাৎ চিৎকার করে শুরু করলেন - “আরে ওই যে ওই যে, ২৭৮, নাকি ২৮০ কত একটা দাম না, ঠিক মনে নেই অমনই একটা কিছু হবে সেটা ভেঙেছে।” ফোনের ওপার থেকে আবার এমন একটা কথা এলো তাতে উনি আবার চেঁচাতে বাধ্য হলেন। “না মা, অমন বোলো না। কাকলির দোষ একদম দেবে না, সে আমার জুতো সেলাই থেকে চণ্ডী পাঠ সব করে, আর সে আমার এতো দিনের পুরোনো। তাকে রেখে আমি ভরসা করেই বেরোই। তার কোনো দোষ নেই। ও-ই ভেঙেছে। আরে বাচ্চাটা যখন ফ্লাস্কটা নিচ্ছে তখন তুই ধরবি না?! এখন বলছে ও ভেঙেছে।” তখন আমি বুঝলাম দিদিমণির বাচ্চার আয়া একটা ফ্লাস্ক ভেঙেছে, দাম ২৮০ টাকা। দিদিমণির আবার চিৎ