Posts

Showing posts from April, 2017

মেয়েটা মুচকি হাসি

মেয়েটা লরেটো ছেলেটা টেকনো ইন্ডিয়া বাটানগর মেয়েটা মুচকি হাসি ছেলেটা লাজুক মেয়েটা “কি রে কারো সঙ্গে দেখা হয়?” ছেলেটা “অর্ক, শুভ্র, দেবাদিত্য, সায়ক, জয়…” মেয়েটা বেগুনি ক্যাফরি, ছেলেটা ফেড জিন্স। মেয়েটা সাদা-কালো স্ট্রাইপস, ছেলেটা ঘন-কালো টিশার্ট। মেয়েটা জয়াদিত্যের সঙ্গে মেট্রো, ময়দান, ছেলেটা ৪৫ বি চারুমার্কেট, ট্রেন। মেয়েটা “কি রে তোদের সেমেস্টার সিস্টেম?” ছেলেয়া “হ্যাঁ, চারটে, তোদের?” মেয়েটা “হ্যাঁ হ্যাঁ তাইতো, তুই পয়েন্ট কত?” ছেলেটা “সেভেন পয়েন্ট ওয়ান।” মেয়েটা “ওটা ভালো না খারাপ?” ছেলেটা “সাপ্লি না থাকা মানেই ভালো।” মেয়েটা ছ টাকার টিকিট, ছেলেটা মায়ের সঙ্গে কলেজ। মেয়েটা টিকিট নিতে উদাসীন, কন্ডাকটরের ঝামটা, ছেলেটা হো হো, মেয়েটা মুচকি হাসি। মেয়েটা আবার “কি রে কারো সঙ্গে দেখা হয়? ছেলেটা “ওই যে বললাম, অর্ক, দেব, সায়ক, জয়। সাউথ পয়েন্ট সায়ক।” মেয়েটা “এই বাণেশ্বর আর সর্বাণীর খবর শুনেছিস? ছেলেটা “তারা এখন চেন্নাই। ওদের তো পুরো ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট হবে!” মেয়েটা মুচকি হাসি, “হ্যাঁ সেটা তো।” মেয়েটা এইটবি নামলো না, ছেলেটা “কি রে নাম!” মেয়ে

লাইনে থাকুন - ১

সিঁড়ি দিয়ে উঠে ছোট্ট কাউন্টার। ডানদিকে বাঁদিকে দুটো হল। রুগিদের বসার জায়গা। তারও ভিতরের ঘরগুলোতে  ডাক্তারবাবুদের বসার ঘর। আগে থেকে বা ফোন করে নাম লেখানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। কাউন্টারে দুজন মহিলা থাকেন। তাঁদের কাছে যে যার ডাক্তারের স্লিপে নাম লিখিয়ে জানা যায় কত নম্বরে নাম। -- “কোন ডাক্তার দেখাবেন?” নাম বললাম। -- “দাঁড়ান। ছয় নম্বর পাবেন।” পেনটা তখন ফাঁকা ছিলো না। অন্য এক মহিলা অন্য এক ডাক্তারের স্লিপে নাম লিখছিলেন। আমি মাঝে মাঝেই হাত বাড়িয়ে আমার ডাক্তারের স্লিপটা নিতে যাচ্ছিলাম। -- “বললাম না দাঁড়াও। আরে তুমি তো আমাদের চেনা। এখানে প্রায়ই আসো তো?” -- “হুম! ছেলের বয়েস যতদিন ততদিনই আসছি। পাঁচবছর টানা।” -- “আরে না না, ছেলের ছোট থেকে না, তুমি ছোটবেলায় মায়ের সঙ্গে এখানে কোনো ডাক্তার দেখাতে আসতে না?”   -- “না, আমি এখানে বড় হয়নি।” -- “ও, তুমি বাইরে বড় হয়েছো, বাইরে তাই না?” -- “হুম।” আমার চোখ তখন ডাক্তারবাবুর স্লিপে কত নম্বর সেই দিকেই। দেখলাম। নাম ছয় নম্বরে হবে। তারপর আবার কাগজ টানতে গেলাম, মনে মনে ভাবতে থাকলাম, এতো কথা বলছে কেন! আমার সঙ্গে তো এতো কথা কোনোদিন বলেনি।

মহিলা কামরা - ৬

স্টেশনে পৌঁছে দেখি বেঞ্চটা ফাঁকা নেই। দুটো মোটে সিট। এই জনবহুল দেশে সিট পাওয়াটা ভাগ্যের ব্যাপার। তাই একটু এগিয়ে ব্যাগটা একটা কাঠের বাক্সের উপর রেখে চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিছুক্ষণ পর স্কুলের তিন দিদিমণি একসঙ্গে এসে আমার পাশে দাঁড়ালেন। এক দিদিমণি শুরু করলেন, “অমৃতাদি কটা খাতা দেখলে?” অমৃতাদি বললেন -- “আটটা।” -- “যাক উন্নতি হয়েছে। সাড়ে তিনটে থেকে আটটা।” আরো এক দিদিমণি জিজ্ঞেস করলেন -- “অমৃতাদি তোমাকে কটা জমা দিতে হবে যেন? পনেরোটা?” অমৃতাদির গলায় বেশ বিরক্তি। “হ্যাঁ, মিনিমাম তো পনেরোটা। ম্যাক্সিমাম সবগুলো।” -- “হ্যাঁ হ্যাঁ, পনেরোটা না হলে তো তুমি ওই ফর্মটা ফিলাপ করতে পারবে না।” প্রথমজন আবার বললেন -- “শোনো, তার বেশি দেখা হয়ে গেলেও কিন্তু তুমি পনেরোটাই দিও তার বেশি দিও না। আমি একবার করেছিলাম। আমাকে পঞ্চাশটা খাতা দেখতে দিয়েছিলো, প্রথমে তিরিশটা জমা দিতে বলেছিলো, আমি তিরিশটাই জমা দিয়েছিলাম। বাকিগুলো নিয়ে যাইনি। জমা দিতে গিয়েছিলাম যখন তখন আমাকে বলেছিলো, ‘আপনাকে তো এবারে কম খাতা দেওয়া হয়েছে, আরো কিছু দি?’ তখন আমি বলেছিলাম, ‘না না ম্যাডাম বাড়িতে বাকিগুলো এখনো দেখা হয়নি, তা

পাহাড়

Image
ছোটবেলায় শুনতাম, জল দিয়ে আঁক কাটতে নেই, দেনা হবে। চৌকাঠে বসতে নেই, বালিশে বসতে নেই। কারণগুলো সবাই জানে। বাবা মাঝে মাঝে সত্যিটা বুঝিয়ে দিতো, বুঝতাম। কিন্তু অনেক কুসংস্কারকে পাত্তা না দিলেও একটাকে খুব দিতাম। নিজের ইচ্ছে করতো বলে। বড়মা বলতো, “পা ছড়িয়ে বসে ভাত খেলে অনেকদূরে বিয়ে হয়। বাসে করে অনেকদূর যেতে হবে, বুঝবি কেমন কষ্ট হয়।” “ঘনঘন আসতে পারবি না, আমরাও তোর বাড়ি যেতে পারবো না, দেখবি খুব কষ্ট পাবি।” আমি তো বাসে করে দূরেই যেতে ভালোবাসি, তাই রোজ পা ছড়িয়ে ভাত খেতাম। অনেকেই বকতো। কিন্তু আমি ওই দূরে যাবার লোভে কোনোদিন পা ছড়িয়ে বসে খেতে ভুলতাম না। ক্লাস এইট পরীক্ষা দিয়ে একটু দূরে ঘুরতে যাওয়া। তাও খুব দূর নয়। রাতে বাস ছেড়ে ভোরে পৌঁছনো। অযোধ্যা পাহাড়। প্রথম পাহাড় দেখে মুগ্ধ হওয়া। চারপাশ পাহাড় দিয়ে ঘেরা এমন একটা ফাঁকা মাঠে গিয়ে বাস থামলো। ওখানেই দুপুরের খাওয়ার জন্যে রান্না, মাটিতে বসে লাইন দিয়ে খাওয়া। সকালে টিফিন খাওয়ার পর আমরা সবাই হেঁটে হেঁটে জায়গাটা দেখা শুরু করেছিলাম। একটা পাহাড় থেকে ঝর্ণা। সেই ঝর্ণার জলের উৎস খুঁজতে পাহাড়ের বহুদূর অব্দি উঠেছিলাম। কিন্তু উৎস খুঁজে পাইনি। জানি পাওয়া য