কালো
ছোটবেলায় একা বাড়ির বাইরে বেরোতে গেলে সবাই ছেলেধরার ভয় দেখাতো। আমাদের পাড়ার এক দাদাকে নাম ধরেই বলা হতো “ও” কিন্তু ছেলেধরা। তার গায়ের রঙ কালো। কালো চাপ দাড়ি। লুঙ্গির সঙ্গে একটা ফতুয়া পরে আমাদের বাড়ির সামনে দিয়ে বস্তা হাতে যেতো। ওই বস্তায় করে সে “গুল” দেওয়ার জন্যে কয়লার গুঁড়ো নিয়ে যেতো, ফলে কয়লার রঙ তার গায়ের রঙকে আরো উন্নত করে দিতো। তখন থেকেই আমি কালো লোক দেখলে খুব ভয় পেতাম। ছোটবেলা থেকে শাক, চা এইসব খাওয়া শুরুই করিনি। ভাবতাম ওগুলো খেলেই আমি কালো হয়ে যাবো। পাড়ার এক জেঠু এটা জানতে পেরে আমার উপর উলটো চাপ দিয়ে আমাকে “কালো মেয়ে” বানিয়ে দিয়েছিলো। জেঠুর নাম কৃষ্ণকান্ত মাইতি। আমরা বলতাম ‘কেষ্ট জেঠু’। জেঠুর নামটা মনে হয় গায়ের রঙকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার জন্যেই রাখা হয়েছিলো। সেই জেঠু আমাকে দেখলেই - ‘কালো মেয়ে’ বলে ডাকতো। এসে আমাকে ছুঁয়ে দিয়ে মা’কে বলতো - “দেখলে ছোট বউমা, তোমার কালো মেয়েটা আমাকে ছুঁয়ে পুরো কালো করে দিলো। এ হে হে! ছ্যা ছ্যা ছ্যা! আমার হাতের এই জায়গাটা পুরো কালো করে দিলে গা!” আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতাম। মা হাসতো। আমার পিসি আমাকে নিয়ে ঠাট্টা করতো। বলত...